পোস্টগুলি

জুলাই, ২০২০ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে
‛গড়পড়তা মানুষ’ ওমর ফারুক: গ্রামীণ সমাজে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। যেসব জিনিস গ্রামীণ সমাজের প্রভাবক ছিলো সেগুলো বিলুপ্ত হতে বসেছে। মানুষের মধ্যে এখন সহমর্মিতা লোপ পেতে বসেছে। আগের সেই সাদাসিধা মানুষ খুঁজে পাওয়া যায়না। মানুষের সমস্যা এখন ব্যাপক আর জটিল। পঞ্চায়েত প্রথা বিলুপ্ত হয়ে গেছে। সমাজ খাওয়ানোর একটা নিয়ম আগে খুব কদর পেয়েছিলো। মানুষ মানুষের উপকারে নিজেকে সামিল করতে পারাকে কর্তব্য মনে করতো। সময়ের সাথে সাথে হিজল, শরৎ এর মতো গড়পড়তা মানুষগুলো কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছে। দেশ ভাগের সময় এরা একবার ভাগ হয়েছে,  হিন্দু-মুসলিম টানাপোড়েনে আরেকবার ভাগ হয়েছে। সর্বশেষ ভাগ হতে বসেছে নগরায়নের প্রভাবে। সকালে লাল মোরগের ডাক, টিনের চালে টুপটাপ বৃষ্টির শব্দ, মুখে আজানের শব্দ, হারিকেনের আলোয় পুঁথি পাঠ সবকিছুর পাঠ চুকিয়েছে। এখন গড়পড়তা মানুষ তৈরির একটা আলামত দেখা যাচ্ছে চারদিকে। কিন্তু এ প্রচেষ্টা সহজাত নয়।চাপিয়ে দেয়া বিষয় বাস্তবে রূপ নেয়া শ্রীহীন দেখায়। জোর করে, জল,পানি দিয়ে তো আর গড়পড়তা মানুষ তৈরি করা যাবে না। প্রকৃতির নিজস্ব নিয়মেই এসব মানুষ তাদের প্রভাব, অবস্থান তৈরির প্র‍য়াস পেতো। সে অবস্থা এখন আর বর্ত...
বড় বৈচিত্রময় জীবনের অধিকারি মিজানুর রহমান মিজান: এ পৃথিবীর সকল কিছুর সৃষ্টিকর্তা একজন, মহান রব। তিনি কত সুন্দর করে থরে বিথরে যেখানে যা লাগে, তাই দিয়ে সাজিয়ে দিয়েছেন পৃথিবী নামক এ জগত সংসারকে। মানুষকে আবার আশরাফুল মাখলুকাত নামে সৃষ্টির শ্রেষ্টত্ব উপাধিতে করেছেন ভুষিত। সসীম জ্ঞানের অধিকারি আমরা মানুষ তা বুঝেও অনেক সময় না বুঝার ভান বা দাম্ভিকতা বা অবহেলায় এড়িয়ে যাই। কিন্তু একটু সচেতন দৃষ্টিতে তাকালে দিনের আলোর মত পরিস্কার হয়ে প্রস্ফুটিত হয়ে উঠে সব কিছু। মহান আল্লাহ জগতের সকল কিছুর সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা, রক্ষাকর্তা ও হেফাজতকারি। পৃথিবীর সকল প্রাণীকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। যখন যার ডাক আসবে রদ হবার কোন প্রকার সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে যে স্থান পরিবর্তন বা লুকিয়ে মরণকে জয় করার আশা করা বাতুলতা তুল্য। অথবা আহাম্মকি ছাড়া কিছুই নেই। যেমন করোনা ভাইরাস আমাদেরকে শিক্ষা দিচ্ছে। পৃথিবীতে কেহ কারো নয়। যা পবিত্র গ্রন্থ আল কোরআনে স্পষ্ট ভাষায় আল্লাহ বলে দিয়েছেন। আর এখন বাস্তবে চোখে আঙ্গুল দিয়ে তার প্রমাণ দেয়া হচ্ছে। তারপর ও আমরা সচেতন হচ্ছি না। কেমন করে বলি সচেতন হচ্ছি বা হবার লক্ষণ এখনও বিরাজিত নয়। য...

বাড়িভাড়া কমাচ্ছেন না বাড়িওয়ালারা, ক্ষতি কার?

গত সপ্তাহে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটা আলোচিত সংবাদ দেখলাম; ভাড়ার জন্য ধানমন্ডির এক বাড়িওয়ালা শিক্ষার্থীদের বাড়ি থেকে বের দেওয়ার পাশাপাশি মূল্যবান সনদপত্র ময়লার বাগাড়ে ফেলে দিয়েছেন। দেখা যাচ্ছে করোনার মতো মহামারীর এই সময়টাতেও আমাদের কিছু মানুষের মধ্যে মানবিক মূল্যবোধটুকু জাগ্রত হয় নি। মানবিক মূল্যবোধের কথা নাহয় পড়েই বলছি। আগে লাভ-লসের হিসেবে আসা যাক। বাংলাদেশ মেস অর্গানাইজেশনের তথ্যমতে ঢাকায় ব্যাচেলর মেস বাসার সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ। ভাড়াটিয়া পরিষদের তথ্যমতে এসব মেস বাসগুলোতে কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সংখ্যাই প্রায় ২০ লাখ। সরকারি বেসরকারি কাজের সাথে যুক্ত এমন ব্যাচেলর আছেন প্রায় ১০ লাখ। এবং গার্মেন্টস কর্মী ব্যাচেলর আছেন ৫ থেকে ৬ লাখ। এমতবস্থায় কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ থাকার কারনে, শিক্ষার্থীরা অনেকেই ঢাকা ছাড়তে চাইছেন। সেই সাথে অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সদস্য ও গার্মেন্টস কর্মী সাটাই হয়ে তারাও গ্রামের বাড়ির দিকে চলে যাচ্ছেন। সবার ঢাকা ছাড়ার মূল কারণই বাড়ি ভাড়া। করোনার কারণে ঢাকায় কাজের পরিমান কমে আসছে। তাই কেউ কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরিচ্যুত হলে এতো টাকা বাড়িভাড়া দিয়ে...
একজন ছিনতাইকারের ইউটিউব সার্চবার অপশনের সাজেশনে লিখা দেখলাম, ‛ছিনতাই করতে গিয়ে ধরা খেলে গণপিটুনি থেকে বাঁচবার উপায় কি?’ ইউটিউবে এই ধরণের কোনো কনটেন্ট আছে? আচ্ছা আগে একটা ছোট গল্প বলে নেই। আরো তিন বছর আগে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে একজন ছিনতাইকারের সাথে আমার পরিচয়। আন্তঃনগর ট্রেন থেকে নামছিলাম। পকেটে মোবাইল এবং মানিব্যাগ, এই দুটো জিনিস নিয়ে আমার মস্তিষ্কে একটা সেন্সরের মতো আছে। একটু নড়াচড়া হলেই টের পাই। প্রচন্ড ভিড়ে ট্রেন থেকে নামার সময় আমার পকেটে অন্য কারো হাত বুঝতে পারি। আমি চুপিসারে ছেলেটার হাত ধরলাম। বয়স বারো কি তেরো এরকমই হবে। ছেলেটার হাতে হাতে তখন আমার মানিব্যাগ। হাস্যোজ্জ্বল মুখে খানিকক্ষণ তাকিয়ে ছেলেটাকে ভিড় ঠেলে বাইরে নিয়ে এলাম। যা হলো, এটাই ছেলেটার কাছে প্রত্যাশার বাইরে। কারণ ধরা খাওয়ার সাথে সাথেই ছেলেটার মনে হয়েছে, এই বুঝি খেলাম গণপিটুনি। কিন্তু আমার মাথায় তখন দুটো প্রশ্ন এসেছে; ‛কি?’ এবং ‛কেনো?’ ‛কি’ প্রশ্নের উত্তরে হলো; কেউ একজন আমার মানিব্যাগ ছিনতাই করার চেষ্টা করেছে। আর ‛কেনো?’ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই ছেলেটাকে বাইরে বের করে আনলাম। প্রথমত আমি ওর চোখে ভয় দেখেছি। কিন্তু আমার হাস্...

আক্ষেপ!

আমার ছেলেবেলা বলি; পাখিদের সাথে মিশতে চেয়েছি তাই বার বার ছুটে গেছি অরণ্যে। ভোরে শিশির মাখা শরীরে সমুদ্রপাড়ে গিয়ে সমস্ত মাছেদের ডেকেছি কিনারে। মাঠ পেরিয়ে তারপর নদী ছুটেছি তেপান্তরে। দিগন্তের পানে ছুটেছি ভেবেছি, কি আছে আকাশের পরে? তারপর আরো ভেবেছি। ভাবনাগুলো সব জমিয়ে শব্দ নিয়ে খেলেছি। এভাবেই কেটেছে আমার ছেলেবেলা। ইচ্ছে ছিলো কবি হবো, নয়তো দার্শনিক। কিন্তু আমাকে থামিয়ে দেওয়া হলো! নবম শ্রেণীতে আমার হাতে বিজ্ঞানের একগাদা বই তুলে দেওয়া হলো। কতো করে বলেছি আমি বিজ্ঞান পড়বো না, তবুও জোর করে আমাকে বিজ্ঞানে ভর্তি করানো হলো। আমার স্বপ্ন থামিয়ে স্বপ্ন দেখলো কে? হ্যাঁ, আমার অভিবাবক। এক্ষেত্রে আমাদের অভিবাবকরা অনেক বেশি স্বার্থপর হন। সন্তান পৃথিবীতে আসার পরই তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। সন্তানকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার কিংবা ফুটবলার বানাবেন। তারপর তো আরো কতো কি। আমৃত্যু সন্তানকে অধিনস্তে রেখে নিজেদের চাওয়া গুলো পূরণ করে যেতে চান। কিন্তু যাকে নিয়ে তারা স্বপ্ন দেখেন, তার নিজের ভেতরও তো স্বপ্ন জমে! বড় হওয়ার সাথে সাথে পারিপার্শ্বিক অবস্থার প্রেক্ষিতে আমাদের মধ্যে বিভিন্ন সাধ জন্মে। স্বপ্ন জমে, ইচ্ছের...

স্বপ্নবাজ মানুষেরা থামে না- থামিয়ে দেয় বাঁধা!

স্বপ্ন ভরা চোখে দু’হাত শূন্যে প্রসারিত করলে, রঙিন ডানা এসে ভর করে কাঁধে। উড়ে যেতে ইচ্ছে হয়; যেইটুকু চাওয়া লিখা আছে, বুকের অদূরে জমা রাখা খামে! কিন্তু হঠাৎ হঠাৎ আকাশ অন্ধকার করে মেঘ আসে। স্বপ্ন ভরা দু’চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। বাঁধা পেয়ে ডানা দুটো হারিয়ে যেতে চায়। স্বপ্ন সব আধাঁরে মুছে থেমে যাবো? হায়! না! একদমই না। স্বপ্নবাজ মানুষেরা থেমে যায় না! আজকে একজন স্বপ্নবাজ মানুষ দেখেছি। খুব কাছ থেকে দেখেছি, রিকশায়। মানুষটার চোখে ক্লান্তির ছাপ দেখেছি কয়েকবার। জোরে জোরে নিঃশাস নেওয়ার শব্দ শুনেছি সহস্রবার। তবুও থেমে যায় নি, আমাকে নিয়ে গেছে গন্তব্যে। এতো কাছ থেকে একজন স্বপ্নবাজ মানুষকে দেখে অবাক হয়েছি অবশেষে। বলছি; একজন রিকশাচালকের কথা! করোনাকালের এই সময়টাতে অনেকে চাকরি হারিয়েছে, টিউশনি হারিয়েছে। পেট ভরে দু’মুঠো খেয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন পর্যন্ত ফুরিয়েছে। কিন্তু স্বপ্ন ফুরোয়নি এই রিকশা চালকের। ঢাকায় একটা প্রাইভেট কলেজে বিবিএ পড়ে। ২২/২৩ বছর বয়সের একজন যুবক। দুপুরের রোদ্রে শরীরের ফর্সা ত্বক লাল হয়ে গেছে। জানতে পারলাম, ঢাকায় টিউশনি করে থাকা-খাওয়া ও পড়ার খরচ চালাতো। করোনায় টিউশনি চলে গেছে। এখন শুধু বেঁচে থাকার...

সফলতা কি?

সফলতা কি? কতটুকু সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে নিজেকে সফল বলতে পারবো? আচ্ছা, আগে একটা ছোট গল্প বলে নেই। বিসিএসের রেজাল্ট পেয়ে ঐদিন রানুদিদি আসলো আমাদের বাসায়। মুখোমুখি আমি আর রানুদিদি। বললো, আমি তো সফল। তুই কি করলি রে আরাফাত? আমি বললাম, ‛রানুদিদি মনে আছে, সড়কে একদিন তুমি আর আমি একসাথে একটা রেস শুরু করেছিলাম? তুমি সোজা সড়কে দৌড়াতে থাকলে। চারপাশটা একটিবারও দেখলে না। তুমি জানতে না রানুদিদি, যেই সড়কে তুমি দৌড়াচ্ছো, সেই সড়কের পাশে একটা ছোট নদী ছিলো। সুন্দর নদী। নদীর পাড়ে দাঁড়ালে হিমশীতল বাতাস শরীরে লাগে। নদীর পাশে জামরুল গাছের নিচে ছোট্ট একটা চড়ুই পাখির বাসা ছিলো। চড়ুই পাখির ছানাগুলো আমি হাতে নিয়ে দেখেছি। নদী ছেড়ে পথে পথে আমি কৃষ্ণচূড়া দেখেছি। বাঁশঝাড়ে বাঁশের ফুল দেখে হটাৎ থমকে গেছি। অথচ, রানুদিদি তুমি জানোই না, বাঁশেও ফুল ফোটে। তুমি শুধু দৌড়াতেই থাকলে। ভাবলে, বিস্তৃন্ন সড়ক পারি দিতে পারলেই তুমি সাফল্যের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাবে। তুমি একসময় সড়ক পারি দিলে ঠিক। ক্লান্ত তুমি পেছনে তাকিয়ে দেখলে, আমি পথের ধারে পরে থাকা কাঠগোলাপ কুড়াচ্ছি। আমি ক্লান্ত ছিলাম না সেদিন রানুদিদি, কাঠগোলাপ কুড়িয়ে পাওয়ার আনন্দে উৎফুল্...