আক্ষেপ!
আমার ছেলেবেলা বলি;
পাখিদের সাথে মিশতে চেয়েছি তাই
বার বার ছুটে গেছি অরণ্যে।
ভোরে শিশির মাখা শরীরে সমুদ্রপাড়ে গিয়ে
সমস্ত মাছেদের ডেকেছি কিনারে।
মাঠ পেরিয়ে তারপর নদী
ছুটেছি তেপান্তরে।
দিগন্তের পানে ছুটেছি
ভেবেছি, কি আছে আকাশের পরে?
তারপর আরো ভেবেছি।
ভাবনাগুলো সব জমিয়ে শব্দ নিয়ে খেলেছি।
এভাবেই কেটেছে আমার ছেলেবেলা। ইচ্ছে ছিলো কবি হবো, নয়তো দার্শনিক। কিন্তু আমাকে থামিয়ে দেওয়া হলো! নবম শ্রেণীতে আমার হাতে বিজ্ঞানের একগাদা বই তুলে দেওয়া হলো। কতো করে বলেছি আমি বিজ্ঞান পড়বো না, তবুও জোর করে আমাকে বিজ্ঞানে ভর্তি করানো হলো। আমার স্বপ্ন থামিয়ে স্বপ্ন দেখলো কে?
হ্যাঁ, আমার অভিবাবক।
এক্ষেত্রে আমাদের অভিবাবকরা অনেক বেশি স্বার্থপর হন। সন্তান পৃথিবীতে আসার পরই তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। সন্তানকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার কিংবা ফুটবলার বানাবেন। তারপর তো আরো কতো কি। আমৃত্যু সন্তানকে অধিনস্তে রেখে নিজেদের চাওয়া গুলো পূরণ করে যেতে চান। কিন্তু যাকে নিয়ে তারা স্বপ্ন দেখেন, তার নিজের ভেতরও তো স্বপ্ন জমে!
বড় হওয়ার সাথে সাথে পারিপার্শ্বিক অবস্থার প্রেক্ষিতে আমাদের মধ্যে বিভিন্ন সাধ জন্মে। স্বপ্ন জমে, ইচ্ছেরা ডানা মেলতে থাকে। পৃথিবীর বিশালতা টের পেতে হলে, পাখি হতে হয়। কিন্তু আমরা পাখির মতন জীবন পাই না। ইচ্ছে হলেই উড়তে পারি না। অধীনস্ততায় বেঁধে রাখা হয়। তাই আমাদের আর পৃথিবীর বিশালতা দেখা হয় না।
কিন্তু আমরা স্বপ্ন মুছে ফেলি না, আবার একই বৃত্তে গেঁথে যাই। নিজের আকাশে আবার সন্তানকে উড়াতে চাই। অপূর্ণ ইচ্ছা সন্তানকে দিয়ে পূরণ করাতে চাই। পৃথিবী এভাবেই চলতে থাকে একই নিয়মে। আমাদের আর কখনো ব্যাক্তিগত আকাশে উড়া হয় না!
|আক্ষেপ|
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন