বলতে পারিনি "ভালোবাসি"!
সময়টাকে শৈশব বলা যেতে পারে, আবার কৈশোর বললে ও ভুল হবে না। প্রাইমারি ছেড়ে সবে মাত্র মাধ্যমিকে উঠেছি। ঐ সময়টাতে আবেগ এমনিতেই অনেক বেশি কাজ করে। দুনিয়ার সবকিছুই রঙিন লাগতো তখন। রঙিন দুনিয়াটাকে আরো বেশি রাঙিয়ে দিলো প্রিয়তমার মিষ্টি একটা চাহনি। বলছিলাম জীবনের সবচেয়ে প্রিয় মানুষটিকে প্রথম দেখার কথা। এতো সুন্দর একটা মানুষ হতে পারে! এলোমেলো লম্বা চুল আর চোখগুলো সত্যিই কাজল কালো ছিল। হৃদপিন্ডে মৃদু কম্পনের কারণ বুঝতে পারিনি সেদিন। কারণটা বুঝতে পেরেছিলাম পাঁচ বছর পর। কারণ তখন আর প্রিয়তমাকে দেখতে পেতাম না, আর বুকের ভেতর হৃদপিন্ডটা ও কাপতো না। এর মাঝের সময়টাতে পরীটার কথা ভেবে ভেবে নিজেকে নার্ভাস বানানো ছিল নিত্যদিনের রুটিন। প্রিয়তমার সামনাসামনি দাঁড়িয়ে কখনো নরমালি কথা বলতে পারিনি। কখনো হাতছুঁয়ে বলতে পারিনি "তোমাকে চাই"।
আসলে নিজেকে প্রেমিক প্রেমিক মনে হয়নি তখন। কখনো ছুঁয়ে দেখতে ও ইচ্ছে হয় নি। সামনে এসে মনের কথাগুলো বলার মতো সাহস অর্জন করতে ও পারি নি। সত্যিই খুব ছোট ছিলাম। আর ছোটরা ও ভালোবাসতে পারে এখন বুঝতে পারি। কারণ এখনো প্রতি রাতে ওর কথা মনে পড়ে। দেখা হয়না তবুও প্রতিদিনই স্বপ্নে দেখি। যদি সাহস করে বলে দিতে পারতাম তখন তাহলে আজ হয়তো এভাবে আফসোসে পোড়তে হতো না। হয়তো চিরতরে পেয়ে যেতাম, নয়তো চিরতরে হারাতাম। তবে এভাবে সারাজীবন একটু একটু করে ভালোবাসার মধ্যে ও একটা মজা আছে। না আছে পাওয়ার সুখ, না আছে হারানোর যন্ত্রনা। এরপর হয়তো জীবনে অনেকেই এসেছে, আবার চলে গেছে। কিন্তু ওর নামটা হৃদয় থেকে কেউই মুছে যেতে পারে নি। একেই হয়তো বলে প্রথম ভালোবাসা।
প্রথম ভালোবাসা এতটা আশ্চর্যজনক না হলে ও পারতো। সাত বছর ধরে হৃদয়ের কোণে একটা জায়গা দখল করে আছে যেই মানুষটার নাম, সেই মানুষটাকে কখনো বুুঝতেই দেইনি যে এতো ভালোবাসি। দুই বছরের ও বেশি সময় হলো দেখতে পাইনা প্রিয় মানুষটিকে। কিন্তু ভালোবাসা একটু ও কমে যায় নি। জীবনে অনেকেই আসবে যাবে, কিন্তু ওই মানুষটাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখা বন্ধ হবে না কখনই। কিন্তু আফসোস একটা সারাজীবই থেকে যাবে, কখনোই সামনে দাঁড়িয়ে মানুষটাকে ভালোবাসি বলতে পারবো না। কারণ,
সে যে অন্য কারো গল্পের নায়িকা!!
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন