শিমুল ফুল ১
নিয়ন তাকিয়ে থাকে শিমুর চলে যাওয়াতে। হটাৎ কি ভেবে দু'হাত প্রসারিত করলো আকাশের পানে। লঞ্চে যাতায়াত করা দূরের যাত্রীরা তাকিয়ে থাকে নিয়নের দিকে। কাকতাড়ুয়া সেজে কে দাঁড়িয়ে আছে নন্দিত এই গ্রামের পথে? লোকে ভাবে; এ হয়তো কোনো খেলা, আট বছর বয়সী এই বালকের জীবনে। আসলে তা না। বিকেলের নরম হয়ে যাওয়া রোদ নিয়নের গায়ে পড়ছে। নিয়ন দু’হাত প্রসারিত করে রেখেছে গায়ের জামা শুকাতে। বিকেলের রোদ ফুরোতেই শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে। অভিমান মুছে অর্ধভেজা জামাতে নিয়ন হেঁটে চলে বাড়ির পথে। এইতো, জীবন কতো সুন্দর; পেরিয়ে যাচ্ছে বয়ে চলা সংগ্রামের বাঁকে বাঁকে!
বাড়ির পেছনের ঝোপ জঙ্গল পেরিয়ে রুপাদের বাড়িতে গিয়ে উঠলো নিয়ন। সামনে দিয়ে আসলে কাকি দেখে ফেলতো এই ভয়ে পেছনের পুকুর ঘাট পেরিয়ে আসা। কিন্তু এসে দেখলো রুপাদের উঠোন ফাঁকা। অন্যদিন চড়ুইপাতি খেলা থাকলে অনেকে থাকে উঠোনে। বাইরে মাটি দিয়ে বানানো আগলা চুলোয় রান্না হয়। শিমুও নেই। নিয়নের মন খারাপ হলো। ঘরের জানালা দিয়ে রুপাকে ডাক দিলো। রুপা আসতেই নিয়ন সামনে গিয়ে জানালার দিকে ঝুঁকে বললো,
‛শিমু তোদের বাড়ি আসে নি রে রুপা?
রুপা মন খারাপ করে বললো,
‛আসলো আর তোর কাকি এসে সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে গেলো। তোদের চাল আর আলু রেখে দিয়েছি, তুই থাক না? মা রাতে ঘরে রান্না করবে। চড়ুইপাতি খেলবো বলে মা বিকেলের জন্য রান্না করে নি ঘরে’
‛না রে থাক, কাল আবার আসবো নে শিমুকে নিয়ে।’
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন